সালথায় স্কুলের টিউবওয়েলের পানি পানকরে শিক্ষকসহ ১০শিক্ষার্থী অসুস্থ-DVB


আজ ফরিদপুরের সালথায় তীব্র তাপদাহের মধ্যে টিউবওয়েলের পানি খেয়েই ৩ শিক্ষক ও ১০ শিক্ষার্থী অসুস্থ পড়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। অসুস্থদের মধ্যে এক শিশুসহ তিন শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রবিবার (২৮ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের রামকান্তুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সালথা থানার ওসি ঘটনাস্থল পরিবদর্শন করেন। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দাবি, পানি খেয়ে নয়- গরমে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
পানি খেয়ে অসুস্থ রামকান্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. রবিউল ইসলাম বলেন, রোজার ঈদের পর থেকে স্কুল বন্ধ ছিল। প্রধান শিক্ষকও মাতৃত্বকালিন ছুটিতে রয়েছেন। দীর্ঘদিন পর রবিবার স্কুল খোলা হয়। সকালে স্কুলে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে প্রথমে বিদ্যালয়ের ক্লাস রুম ও মাঠে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা পরিস্কার করার কাজ শুরু করি।
তিনি আরও বলেন, কিছু সময় কাজ করার পর তীব্র গরমে আমরা সবাই পানির পিপাশায় ভোগছিলাম। তখন সকলেরই গলা শুকিয়ে আসছিল। পরে স্কুলের টিউবওয়েল চেপে ঠাণ্ড পানি বের করে খাই। কিন্তু কিছুক্ষণ পর একে একে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বমি করতে থাকে এবং অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ সময় স্থানীয় এক যুবক এসে আমাকে বলেন, স্যার ওই টিউবওয়েলের পানি খেয়েন না, পানিতে বিষ মেশানো হয়েছে। পরে অসুস্থদের দ্রুত সালথা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া যাওয়া হয়। সেখানে সকলকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে রানিতা নামে এক শিশুর অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজি মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অসুস্থদের মধ্যে শিক্ষক সুকলা রানী শীল, রেবেকা বেগম, রবিউল ইসলাম, শিক্ষার্থী সাদিহা, নাহিদ ও তৌকিয়ার নাম পাওয়া গেছে। বাকিদের নাম পাওয়া যায়নি।
সালথা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল মমিন বলেন, টিউবওয়েলের পানিতে কোন ধরণের বিষক্রিয়া পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে, ওই শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। অসুস্থদের মধ্যে দুই জনের চিকিৎসা এখনো চলছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে সবাই শঙ্কমুক্ত।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফায়েজুর রহমান বলেন, আমরা প্রথমে খবর পেয়েছিলাম টিউবওয়েলের পানি খেয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পরে ঘটনাস্থলে এসে ডা. এর সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, তিনি জানিয়েছেন টিউবওয়েলের পানিতে বিষক্রিয়ার কোন লক্ষণ পাননি।
সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, রবিবার স্কুল খোলার পর শিক্ষক-শিক্ষাথীরা সকালে স্কুলে এসে টিউবওয়েলের পানি খেয়ে অসুস্থ পড়লে তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এখন সবাই মোটামুটি সুস্থ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছেন, তারা বিষক্রিয়ার কোনো আলামত পাইনি। গরমের কারণেও এ ঘটনা ঘটতে পারে। তারপরেও টিউবওয়েলের পানি আমরা পরীক্ষা করে দেখবে। একইসাথে আগামীকাল থেকেই ছাত্রছাত্রীরা যাতে নিরাপদ পানি খেতে পারে, সে ব্যবস্থা করা হবে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
দৈনিক ভোরের বার্তা
About Author
Leave a reply
You must be logged in to post a comment.