অধ্যাপক তাহের হত্যা মামলায় ফাঁসি কার্যকর-দৈনিক ভোরের বার্তা
অধ্যাপক তাহের হত্যা মামলায় ৪নং আসামি ডক্টর মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের (৫৫) ফাঁসি (২৭শে জুলাই) রাত দশটা ১মিনিটে কার্যকর হয়েছে। লাশ গ্রহণ করতে অপেক্ষা করছেন ছোট ভাই আরজু মিয়া। লাশের অপেক্ষায় রয়েছেন গ্রামের বাড়িতে আত্বীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী।
ডক্টর মিয়া মহিউদ্দিনের গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরে ভাঙ্গা উপজেলার তুজারপুর ইউনিয়নের জানদি গ্রামে। তিনি রাবির ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ছিলেন।
রাত দশটা ১ মিনিটে ফাঁসি কার্যকর হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে গ্রামবাসী মহিউদ্দিনের বাড়িতে সন্ধ্যা থেকে ভিড় জমান। স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে মহিউদ্দিনের গ্রামের এলাকা। বিষয়টি নিশ্চিত করেন নিহত মহিউদ্দিনের চাচাতো ভাই সিকু মিয়া।
সিকু মিয়া জানান, মহিউদ্দিন এর মা এখনো জানেন না তার ছেলে চিরদিনের জন্য ঘুমিয়ে গেছেন। অন্যান্য স্বজনদের কান্নাকাটি দেখে নির্বাক তাকিয়ে থাকেন তার শতবর্ষী বৃদ্ধা মা সেতারা বেগম। গ্রামের শত শত মহিলারা মহিউদ্দিনের খোঁজ নেওয়ার জন্য বাড়িতে ভিড় জমান।
সিকু মিয়া আরো জানান, ভাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ফোন করে খোঁজ নিচ্ছেন কখন জানাযা হবে? আমরা জানাযায় শরিক হবো। তবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি বাড়ীর জামে মসজিদের সামনে তাকে দাফন করা হবে এবং জুম্মার নামাজের আগেই জানাযা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
উল্লেখ্য যে, ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজ হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এস তাহের আহমেদ। একদিন পর ৩ ফেব্রুয়ারি বাসাটির পেছনের ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয় তার গলিত মরদেহ। ওইদিন রাতে তার ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ রাজশাহীর মতিহার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে পুলিশ অধ্যাপক তাহেরের সহকর্মী সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহী ও স্থানীয় জাহাঙ্গীর আলমসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করে।
২০০৭ সালের ১৭ মার্চ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক চারজনকে ফাঁসির আদেশ ও দুজনকে খালাস দেন। সাজাপ্রাপ্তরা হলেন একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, অধ্যাপক ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলম, তার ভাই নাজমুল আলম ও নাজমুল আলমের স্ত্রীর ভাই আব্দুস সালাম।
তবে বিচারে খালাস পান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহী ও জাহাঙ্গীরের বাবা আজিমুদ্দিন মুন্সি।
পরবর্তীতে সাজাপ্রাপ্তরা উচ্চ আদালতে আপিল করেন। আপিল বিভাগ মিয়া মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলমের রায় বহাল রাখলেও নাজমুল আলম ও নাজমুল আলমের স্ত্রীর ভাই আব্দুস সালামের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন করেন।
ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি:
দৈনিক ভোরের বার্তা
About Author
Leave a reply
You must be logged in to post a comment.