মধুখালীতে প্রসূতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ধুম্রজালের সৃষ্টি
ফরিদপুরের মধুখালী পৌর সদরে অবস্থিত সুমী (প্রাঃ) ক্লিনিক এন্ড নার্সিং হোমে সিজারের ১৩দিন পর প্রসুতীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ধ্রমজালের সৃষ্টি হয়েছে।
ক্লিনিক ও বিভিন্ন সুত্রে জানাগেছে উপজেলার বাগাট ইউনিয়নের মিটাইন গ্রামের মোঃ মনিরুল শেখের স্ত্রী রত্না বেগম সন্তান প্রসববেদনা নিয়ে মধুখালী পৌর সদরে অবস্থিত সুমী (প্রাঃ) ক্লিনিক এন্ড নার্সিং হোমে তার স্বজনেরা নিয়ে আসেন। ঐদিন ১৩ এপ্রিল রাত সাড়ে ১১টায় নির্ধারিত ডাক্তার মাসুদুল হক (৪৩২১৪) সিজার করেন। প্রসূতী একটি ছেলে সন্তান জন্ম দেন।
বাচ্চার অবস্থা আশংকাজন হওয়ায় ডাক্তার তাকে ফরিদপুরে শিশু হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। রত্না বেগম সুমী ক্লিনিকে ৩/৪দিন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের মোঃ মোফাজ্জে শেখ বাবার বাড়ী ছকড়িকান্দী গ্রামে যান। বাবার বাড়ী ২/১দিন অবস্থান করার পর ফরিদপুর শিশু হাসপাতালে যান এবং সেখানে ৩/৪ দিন অবস্থান করার পর হটাৎ অতিরিক্ত রক্তক্ষণ শুরু হলে শিশু হাসপাতালের ডাক্তার রত্নাকে দ্রুত ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে পাঠান।
সেখানে তার শাশীরিক অবস্থার আরো অবনতি হলে ডাক্তার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন। সেখানে তাকে দ্রুত অপারেশন করা হয়। জরুরী অবস্থায় আইসিইউ প্রয়োজন হওয়ায় এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউর ব্যবস্থা না পাওয়ায় তাকে দ্রুত যমুনা জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয় এবং ২৫ এপ্রিল ২০২৩ খ্রিঃ সেখানে তার মৃত্যৃ হয়।
প্রসূতী রত্না বেগমের সিজার পরবর্তী মৃত্যুকে কেন্দ্র করে, ভুল তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন সোসালমিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় মৃত্যু নিয়ে ধ্রæমজালের সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ছাড়পত্রে বিভিন্ন টিসুর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রত্না বেগমের মৃত্যুর কারন উল্লেখ রয়েছে। প্রসুতীর সিজারের পর পেটে গজ,টিস্যু ও ক্লিপ রেখেই সেলাই,আসলে এমনটির কোন ঘটনাই ঘটে নাই সুমী ক্লিনীকে রত্না বেগমের ক্ষেত্রে।
প্রসূতীর মৃত্যুর কারন অনসুন্ধানে মধুখালী সদর হাসপালের আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ মোঃ কবির সরদারকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি ১ কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আঃ সালামের নিকট জমা দিবেন।
রত্না বেগমের স্বামী মোঃ মনিরুল শেকের কাছে তার স্ত্রীর মৃত্যু বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান আমার স্ত্রীর সিজার করার পর ৭/৮দিন ভালই ছিল। হঠাৎ অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে অসুস্থ্য হয়ে পরলে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করি।
অবশেষে ২৫ এপ্রিল আমার স্ত্রী মৃত্যু বরন করেন। বিভিন্ন সোসালমিডিয়ায় দেখলাম সিজারের পর পেটে গজ,টিস্যু ও ক্লিপ রেখে সেলাই । এটা সত্য নয় । তার পেটে এ সব কিছুই ছিল না এ গুল বানয়াট। ডাক্তার বলেছেন অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে এবং হাসপাতালের রিপোর্টে সেটাই উল্লেখ আছে। সুমী ক্লিনিক বা ডাক্তারের বিরুদ্ধে আমার কোন অভিযোগ নাই।
রত্না বেগমের পিতা মোঃ মোফাজ্জেল শেখ একই বক্তব্য প্রদান করেন। রত্না বেগমের মৃত্রুর বিষয়ে সুমী ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুমী বেগম বলেন ১৩ এপ্রিল রাত সাড়ে ১১ টায় রতœা বেগম প্রসব বেদনা নিয়ে আমার ক্লিনিকে এলে নিয়ম মেনেই তাকে সিজার করা হয়েছে। ৪ দিন আমাদের ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হয়ে বাড়ীতে ফিরে জান।
তার পর তার কি হয়েছে আমি জানি না। বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারলাম ১১দিন পর সে ঢাকায় চিকিৎসাধীন মৃত্যু বরন করেছেন। আমাদের কাছে হাসপাতালের রিপোর্ট আছে সেখানে তার পেটে গজ,টিস্যু বা ক্লিপ জাতীয় কিছু আছে বলে উল্লেখ নাই ।
সেখানে বলা হয়েছে অতিরিক্ত রক্তক্ষণে তার মৃত্যু হয়েছে।তদন্ত কমিটির প্রধান ডাঃ মোঃ কবির সরদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান তদন্ত হয়েছে রোগীর পেটে গজ,টিস্যু বা ক্লিপের কোন অস্তিত নাই। হাসপাতালের রিপোর্টে অতিরিক্ত রক্তক্ষনে তার মৃত্যু হয়েছে।
হৃদয় শীল ,মধুখালী
দৈনিক ভোরের বার্তা
About Author
Leave a reply
You must be logged in to post a comment.
কবিতা: অনুতপ্ত হতে হবে