গভির রাতে ঘর তোলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ আহত- ৫


ভোলায় জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের পাঁচজন আহত হয়েছেন। গতকাল ১২ ফেব্রুয়ারী রবিবার রাত দুইটার দিকে উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
আহত এক পরিবারের সদস্যরা হলেন আলমগীর, আমেনা ও নাজমা । অপর পরিবারের হারুন, ও রাজিয়া আহত হয়েছেন। আহত সবাই ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল রহিম ও হারুনের মধ্যে। আর এস এবং এস এ রেকর্ডিয় মালিক নিজ ভোগ দখল থাকিয়া ১৭ বছর পুর্বে রহিমগংদের নিকট ছাপ কবালা মূলে ৬৮ শতাংশ ভূমি বিক্রি করেন। দির্ঘদিন যাবৎ রহিমগঙরা ভোগদখলকার বিদ্যমান থাকলে হারুন তাদের ক্রয়কৃত ভোগদখলিয় ভুমিতে বন্দোবস্তিয় কার্ডের মালিক দাবী করিয়া রহিমগংদের উল্লেখিত জমি হইতে উৎখাত করার চেষ্টা চালায়।
রহিমের শ্ত্রী শাহনাজ বলেন আমার স্বামীকে মিথ্যা মামলায় জেলে দিয়ে হারুনরা রাতের আধারে আমাদের জমি দখল করে ঘর তুলতে আসে, আমরা বাঁধা দিলে আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় আমার দেবর আলমগীর, মেয়ে আমেনা ও নাজমা আহত হয়। শাহনাজ আরো বলেন আমরা জৈনেক হাওলাদারের নিকট হইতে সাড়ে ৮ গন্ডা জমি ক্রয় করে ভোগ দখলে আছি।
এত বছরে কোন দিন হারুন এই জমি দাবি করেনি, হঠাৎ সে বলে এটা তার কার্ডের জমি আমরা তার জমির উপরের বাড়িঘর ছেড়ে যেতাম । এমতাবস্থায় গতকাল রাত দুইটার দিকে হারুন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী নিয়ে এসে আমাদের উপর হামলা করে, আমাদের জিম্মি করে রেখে বাড়িতে ঘর তুলতে চেষ্টা করে।
পরে আমাদের ডাক চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে আমার দেবর আলমগীরকে আহত করে এবং তারা ঘর তুলতে না পেরে পালিয়ে যায়।
আহত আলমগীর বলেন আমি ডাকচিৎকার শুনে স্থানীয় মেম্বারকে বিষয়টি জানিয়ে মেম্বার সহ ঘটনাস্থলে পৌছলে আমাদেরকে লক্ষ্য করে হারুন গ্রুপের লাঠিয়াল কাদের বয়াতি গুলি করে,এবং আমার বাম পায়ে একটি গুলি লাগে ও বেঁচে যায় মেম্বার ফরিদ।
এদিকে পাল্টা অভিযোগ তুলে হারুন জানান আমি ২০০৪ সালে এই জমি বন্দোবস্ত নিয়ে ২০২৩ সাল পর্যন্ত খাজনা সেলামী পরিশোধ করেছি এই জমি আমার নিজ নামে বন্দোবস্ত দিয়েছে সরকার বাহাদুর । কিছু জমি রহিমের ভোগদখলে বাকিটা আমার দখলে আছে। এ জমির বিরোধের বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান রেজাউল হক মিঠু চৌধুরি ফয়সালা করে দিয়েছে কিন্তু রহিম গংরা চেয়ারম্যানের ফয়সালা মানতে নারাজ থাকায় বিবাদের সৃষ্টি হয়।
কিছুদিন আগে সালিস করে সিদ্ধান্ত দেন চেয়ারম্যান কিন্তু রহিম গংরা সে সিদ্ধান্ত অমান্য করছেন। চেয়ারম্যান মহদয় আমাকে জায়গা বুঝিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেয়ার পরে রহিম এ জমি সংক্রান্ত মামলায় জেলে থাকার কারনে ক্ষুব্ধ হয়ে রহিমের লোকজন গতকাল রাতে আমাদের বাড়িতে এসে আমার বসতঘর কুপিয়ে আমাকে ও আমার শ্ত্রী কে গুরুতর আহত করেন।
সংঘর্ষের বিষয়ে স্থানীয় মেম্বার ফরিদ বলেন গভীর রাতে ঘর তোলার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গেলে আমাদের লক্ষ্য করে গুলি করেন দুর্ভৃত্তরা । সেখানে আলমগীর গুলিবিদ্ধ হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে যাবার আদেশ দেই । তবে গভির রাতে ঘর তোলার বিষয়টি জোড় করে জমি দখলের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে আমি মনে করছি।
এ বিষয়ে ইলিশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ গোলাম মোস্তফা বলেন গতকাল রাতে জরুরী সেবা ৯৯৯ এর কলে আমার পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে পৌছে উভয় পক্ষের আহতদের চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দিয়ে ঘটনাস্থল শান্ত রাখেন । এ ঘটনায় এখনো কোন পক্ষের অভিযোগ পাইনি অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ভোলা প্রতিনিধি
দৈনিক ভোরের বার্তা
About Author
Leave a reply
You must be logged in to post a comment.