ভাঙ্গার হতদরিদ্র সুরুজ্জামান মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন
ফরিদপুরের ভাঙ্গার চান্দ্রা ইউনিয়নের গোয়ালদী গ্রামের হতদরিদ্র নসিমন চালক সুরুজ্জামান শেখ। নসিমন চালিয়ে সামান্য আয় দিয়ে ৫ জনের সংসার চলে সুরুজ্জামানের।
নসিমন চালিয়ে সামান্য আয় দিয়ে ৫ জনের সংসার চলে সুরুজ্জামানের। প্রভাবশালী প্রতিবেশী লাল মিয়া হাওলাদার বিপুল সম্পদের মালিক। তার এক ছেলে থাকে মালয়েশিয়ায়। সুবিশাল বিল্ডিং নির্মান করবেন। লোলুপ দৃষ্টিপড়ে হতদরিদ্র সুরুজ্জামানের কুড়েঘরের প্রতি।
তাকে সরিয়ে ইমারত গড়তে চান তিনি। বেড়া দিয়ে যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করতে চান সুরুজ্জামানের। তার কয়েক ভাইকে ভয় দেখিয়ে, লোভ দেখিয়ে মুখ বন্ধ করেন লাল মিয়া।
এছাড়াও লাল মিয়ার ছেলেসহ কয়েকজন ওয়েলকাম ও মাদকের সাথে যুক্ত বলে অভিযোগ করেন সুরুজ্জামানের স্ত্রী ও ওই গ্রামের কয়েকজন। প্রতিবাদী সুরুজ্জামান একাই প্রতিবাদ করেন। আইনের আশ্রয় নেয় সে। ওই গ্রামের কয়েকজন মাতুব্বর বিষয়টি জিইয়ে রেখে ফায়দা লুটতে চান।
টাকা পয়সার কাছে অনেকটাই হার মানেন সুরুজ্জামান। পুলিশ ঘটনাস্থলে কয়েকবার যায়। আইন প্রভাবশালীদের বাধা হয়ে দাড়ায়। সাংবাদিকদের সুরুজ্জামানের স্ত্রী জানান, কয়েকদিন আগে হুমকি দেওয়া হয় এখান থেকে সরে না গেলে তাকে মেরে ফেলা হবে। ওরে মারলে আর কত লাগবে ! ১০/২০ লাখের বেশী নয়।
এর ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি নসিমন চালিয়ে বাড়ি যাওয়ার পথে সুরুজ্জামানকে মেরে ফেলার জন্য লাল মিয়া, সবুজ তানভীর , আলীমুজ্জামান, ফাইকুসহ ৭/৮ জন মিলে পূর্বপরিকল্পিত ও সংঘবদ্ধভাবে বাড়িতে প্রবেশ করার সময় রাত ১০ টার দিকে লোহার রড, লাঠি দিয়ে মাথা, শরীরের বিভিন্ন স্থানে অমানুষিকভাবে বর্বর নির্যাতন করে।
সে সময় তার চিৎকারে স্ত্রী এগিয়ে এলে তাকেও বেদম প্রহার করা হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্বার করে প্রথমে ভাঙ্গা হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দ্রুত ফরিদপুরে পাঠান। পরে ফরিদপুর মেডিকেলের চিকিৎসকগণ তাকে দ্রুত ঢাকায় নিতে বলেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তার জানান তার মাথায় হাড় ভেঙ্গে এক অংশ দেবে গেছে।
পরে জরুরি বিভাগের নিউরোসার্জন মাথা অপারেশন করে জমাট বাধা রক্ত বের করেন এবং প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে বলে জানান । সে এখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। সুরুজ্জামানের স্ত্রী অভিযোগ করে আরো জানান, এখানে এসেও আমাদেরকে হাসপাতালে যাতে চিকিৎসা না হয় নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করছে।
এ নির্মমতার সঠিক বিচার চেয়েছেন ভুক্তভোগী সুরুজ্জামানের স্ত্রী। সুরুজামানের স্ত্রী বলেন, রোগীকে নিয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন থাকায় মামলা করতে পারেনি, তবে বাড়িতে এসে মামলা করবো। থানা সূত্রে জানা যায়, ভাঙ্গা থানা পুলিশ ঘটনা শুনে একাধিকবার ঘটনা স্থলে পরিদর্শন করেছেন এবং পুলিশ মাঠে রয়েছেন। উক্ত বিষয়ে কয়েকজন সাংবাদিক লাল মিয়া হাওলাদারের বাড়িতে গিয়ে জানতে চাওয়ায় তারা অত্যন্ত ঔদ্যন্তপূর্ন আচরণ করেন।
মো. সাখাওয়াত হোসেন ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি
দৈনিক ভোরের বার্তা
About Author
Leave a reply
You must be logged in to post a comment.
কবিতা: অনুতপ্ত হতে হবে