স্বাধীনতার পথে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা DBB


স্বাধীনতা অর্জনের পর অর্ধশত বছর পেরিয়ে গেলেও, দক্ষিণ এশিয়ার সম্ভাবনাময় দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ এখনো নানা চ্যালেঞ্জে পরিপূর্ণ। দুর্নীতি ও সিন্ডিকেট ব্যবস্থা উন্নয়নের পথে প্রধান বাধা হিসেবে দাঁড়িয়েছে, যা তরুণ প্রজন্মের ন্যায্য সুযোগ পাওয়ার পথে অন্তরায়।
সুশাসন ও জবাবদিহিতার অভাব এই সম্ভাবনাময় জাতিকে পিছিয়ে দিচ্ছে। শিক্ষাব্যবস্থা এখনো মুখস্থনির্ভরতার বৃত্তে আবদ্ধ, বিশ্বমানের উদ্ভাবনী শিক্ষার পরিবর্তে চাকরির প্রস্তুতিই মুখ্য। জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির দিকে অগ্রসর হতে হলে গবেষণা, কারিগরি শিক্ষা ও বাস্তবমুখী জ্ঞানচর্চায় বিনিয়োগ বাড়ানো জরুরি.
উচ্চশিক্ষিত যুবসমাজের বড় অংশ আজ বেকারত্বের শিকার। দক্ষতা উন্নয়ন, উদ্যোক্তাবান্ধব নীতি এবং নতুন শিল্পখাত তৈরীর মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সময়ের দাবি। সকলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা উন্নত বাংলাদেশের পূর্বশর্ত। পাহাড়ি ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতি বৈষম্য দূর করে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশের সম্ভাবনা বিশাল, তবে তা বাস্তবায়নের জন্য দুর্নীতি ও বৈষম্য দূর করে শিক্ষাব্যবস্থা ও অর্থনীতিকে যুগোপযোগী করতে হবে। সুশাসন ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে আমরা একটি উন্নত, প্রযুক্তি নির্ভর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারি। তরুণদের নেতৃত্বে, নতুন স্বপ্ন ও কর্মঠ মনোভাব নিয়ে আমরা একটি ন্যায়সঙ্গত ও উদ্ভাবনী জাতি হিসেবে বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারি।
“স্বাধীনতার প্রকৃত মর্ম: আমাদের আকাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ” “তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা!” – স্বাধীনতা শব্দটি প্রতিটি বাঙালির মুখে মুখে প্রচারিত বহুল ব্যবহৃত একটি শব্দ, কিন্তু আদৌ কি কেউ স্বাধীনতার প্রকৃত মর্ম বোঝে? নারীর নিরাপত্তাহীনতা, দুর্বলদের প্রতি অন্যায়, রাজনৈতিক ও সামাজিক স্বার্থপরতা কি সত্যিই আমাদের স্বাধীনতার আদর্শকে ধারণ করে? স্বাধীনতা এবং স্বেচ্ছাচারিতার মধ্যে যে পার্থক্য রয়েছে, তা বোঝাতে পারলে হয়তো সমাজের অনেক সমস্যার সমাধান আপনা থেকেই হয়ে যেত।
আমাদের প্রত্যাশা একটি বৈষম্যহীন-দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা, যেখানে মানবাধিকার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত থাকবে। প্রতিটি শিশু নির্ভয়ে, নিরাপদে সুস্থ পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারবে। আমরা চাই, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন একটি বৈষম্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক, বিদ্বেষমুক্ত, নৈতিক, শিক্ষিত ও প্রযুক্তিনির্ভর রাষ্ট্র পায়, যেখানে প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
আমরা স্বপ্ন দেখি এমন একটি রাষ্ট্রব্যবস্থার, যেখানে আইনের সুশাসন প্রতিষ্ঠিত থাকবে, যেখানে ধর্ষণ, বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড, নারী ও শিশু নির্যাতন, মানব পাচার প্রভৃতি জঘন্যতম অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে এবং কেউ পরবর্তীতে অপরাধ করতে কুন্ঠিত বোধ করবে।
আমাদের আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ হবে শিক্ষা, গবেষণা, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি নির্ভর, যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), মেশিন লার্নিং, বায়োইনফরমেটিক্স, এবং সাইবার নিরাপত্তার মতো ক্ষেত্রগুলোতে তরুণ প্রজন্ম নব নব দ্বার উন্মোচিত করে নিজেদের কর্মসংস্থান করবে।
সাইফুল ইসলাম
দৈনিক ভোরের বার্তা
About Author
Leave a reply
You must be logged in to post a comment.