ধর্ষণের অভিযোগ তুলে বাবা-ছেলেকে নির্যাতন কারি রুমা অবশেষে গ্রেপ্তার


সেই আলোচিত ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে আটকে রেখে এক কিশোর (১৫) ও তার বাবাকে পাশবিক নির্যাতনের ঘটনার মূলহোতা রুমাকে (৩৬) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৬ মে) সন্ধ্যায় ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার মাঝকান্দি মোড় হতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।রুমা মাঝকান্দি এলাকার নাজিম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তির মেয়ে।
বুধবার (১৭ মে) দুপুর ১টার দিকে ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) শেখ মো. আব্দুল্লাহ বিন কালাম রুমাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, গত ১৭ মার্চ মধুখালীর আড়ুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি শ্রেণিকক্ষে আটকিয়ে বাবা-ছেলেকে নির্যাতনের ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। সেই ভিডিওতে রুমাকে ওই বাবা-ছেলেকে পাশবিক নির্যাতনের নির্দেশ দিতে দেখা যায়।
সেখানে রুমার সঙ্গে আরও ৮-১০ জনকে নির্যাতনে অংশ নিতে দেখা যায়। এ ঘটনায় পুলিশ খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করতে পারলেও ঘটনার পর থেকে রুমা আত্মগোপনে চলে যান।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ বিন কালাম আরও জানান, পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে মোট ৮ জনকে গ্রেপ্তার করে। আর রুমাকে গ্রেপ্তারে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ অভিযান চালাতে থাকে।
গ্রেপ্তার এড়াতে এর মধ্যে রুমা একেক করে দেশের ৫টি জেলায় অবস্থান করেন। সর্বশেষ মাগুরা জেলা থেকে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার মাঝকান্দি মোড়ে একটি গাড়ি থেকে নামলে পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মো. আব্দুল্লাহ আরও জানান, গ্রেপ্তার রুমাকে বুধবার বিকালে ফরিদপুরের আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত আছেন তা খুঁজে বের করতে পুলিশের পক্ষ থেকে রুমার জন্য প্রয়োজনে রিমান্ড চাওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার, সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) সুমন কর, মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম, নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিরাজ হোসেনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ মার্চ ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের আড়ুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি শ্রেণিকক্ষে ইয়ামিন মৃধা (৪০) ও তার ছেলে রাজন মৃধাকে (১৫) নির্মম নির্যাতন করা হয়। এরপর নির্যাতনের ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হলে নিন্দার ঝড় উঠে।
ওই ভিডিওতে মাঝকান্দির নাজিমউদ্দিনের মেয়ে রুমার নেতৃত্বে পাশবিক নির্যাতনের ভয়াবহতা ফুটে ওঠে। পরে পুলিশ ঘটনার প্রায় দুই মাস পর আলোচিত রুমাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হলো।
নিজস্ব প্রতিবেদন
দৈনিক ভোরের বার্তা
About Author
Leave a reply
You must be logged in to post a comment.