কবিতা- ধোলাই


কবিতা– ধোলাই
ইসমাইল হোসেন ফরিদ
সিনিয়র শিক্ষক
ফরিদপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
[গ্রামাঞ্চলে বান্ধবী নিয়ে ঘুরতে এসে শহরের এক অহংকারী ছেলে গাঁয়ের ছেলেকে ‘ক্ষ্যাত‘ এবং ফকির বলে গালি দেয়ায় গাঁয়ের ছেলে শহরের ছেলের বাসস্থান, খাবার, জিন্সের ছেঁড়া প্যান্ট, টাকা থাকা সত্ত্বেও শহরের কেউ কেউ ব্যাংক থেকে বিপুল অর্থ কর্জ বা ঋণ নিয়ে তা মেরে দেয়া এবং আন্তরিকতাবিহীন আপ্যায়ন নিয়ে এভাবে শহরের ছেলেকে ধোলাই দিলো।]
‘ক্ষ্যাত’ বলে দিচ্ছিস গালি
পাস কোথায় তুই খাবার?
ক্ষেত না থাকলে কি চিবিয়ে খাবি
অবৈধ টাকা তোর বাবার?
আছিস সুখে, করিস দাবী
মানতে কি আর পারি?
আসিস কেন গ্রাম দেখতে
তোদের শহর ছাড়ি?
তোদের নাকি বাসা আছে
পাখির বাসার মতো,
এসব বলে পাখিদের আর
লজ্জা দিবি কত?
আরে! পাখির বাসা খোলা জায়গায়
আকাশ যাহার সীমা,
আর বদ্ধ খাঁচায় বসত করে
হচ্ছিস মাংসের কীমা।
সেই খাঁচাকে বলিস ‘বাসা’
আছে কিরে লজ্জা?
এই বাসা তো সেই বাসা নয়
যতই থাকুক সজ্জা।
বাগার ছাড়া ছোলার ডালকে
বলিস রে চটপটি,
মজা করে খাস নাকি তা
বেঁধে তোরা জুটি।
ফুচকা নামক আলুভর্তার
তোরা নাকি পাগল?
এসব দেখলে নাক সিটকাবে
মোদের বাড়ির ছাগল।
টাকা থাকতেও মারার ধান্দায়
করিস তোরা কর্জ,
কি খাস তোরা? ভেবে দেখ তো
পোড়া তেলের বর্জ্য।
তোদের শরীর রোগের খামার
মারি যদি ল্যাং,
তিন হাত দূরে পড়বি ছিটকে
ভেঙ্গে যাবে ঠ্যাং।
ছেঁড়া প্যান্টে ঘুরে বেড়াস
এই ভিক্ষুকের পোলা,
তোদের টাকায় মারি লাথি
থু থু দেই এক দলা।
টোস্ট, বিস্কুট খাওয়াস তোরা
গেলে কেহ বাসায়,
তোদের এসব কর্মকাণ্ড
মোদের শুধু হাসায়।
সুখের আশায়, সুখের নেশায়
শহরে তোরা থাকিস,
সত্যিকারের সুখ আছে কি
তার খবর কি রাখিস?
মুক্ত হাওয়া, শুদ্ধ খাবার
বিশাল প্রকৃতির কোলে,
বেড়ে উঠি, বাস করি
আমরা গাঁয়ের ছেলে।
দৈনিক ভোরের বার্তা
About Author
Leave a reply
You must be logged in to post a comment.