সিলেটে মাদরাসা শিক্ষকের ওপর বর্বরোচিত হামলা; শিক্ষক সমিতির নিন্দা-দৈনিক ভোরের বার্তা
সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার মানিকগঞ্জ বাজারে এক মাদরাসা শিক্ষককে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
বর্তমানে গুরুতর আহত শিক্ষক মাওলানা হোসাইন আহমদ সিলেট ওসমানী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। তিনি ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার বাঘমারা দারুল আরকাম ইবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষক।
শনিবার (২০ আগস্ট) সকাল আনুমানিক ১১টায় উপজেলার মানিকগঞ্জ বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ দারুল আরকাম শিক্ষক কল্যাণ সমিতি সিলেট জেলার সভাপতি হাফেজ মাওলানা মো. ফয়জুল হাসান।
সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে শিক্ষক মাওলানা হোসাইন আহমদ এর মালিকানাধীন দোকানের সামনে টিন দিয়ে বেঁড়া দেন মানিকোনা গ্রামের রানা মিয়া। পরেরদিন শুক্রবার বিষয়টি মানিকগঞ্জ বাজার বণিক সমিতি ও স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানান।
শনিবার সকালে দোকানের সাটার খুলতে গেলে বাধা দেন রানা মিয়া। এ সময় দেশীয় অস্ত্র দাঁ দিয়ে মাওলানা হোসাইনকে এলোপাতাড়ি কোপ দেন রানা। এতে মারাত্বক ভাবে আহত হন হোসাইন। সে সময় তার পিতা এগিয়ে এলে তাকেও কুপাতে এগিয়ে আসে দুর্বৃত্তরা।
সেসময় রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন হোসাইন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। রোগীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য কর্তব্যরত ডাক্তার সিলেট ওসমানী মেডিকেলে পাঠিয়ে দেন। বর্তমানে তিনি ওসমানী মেডিকেলের ৪তলার ৭নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
একাধিক স্থানীয়রা জানান, রানা মিয়া মানিকোনা এলাকায় জোরপূর্বক অন্যের জায়গা দখল করেন। এক নামে তাকে ‘ভূমি খেকো’ হিসেবে সবাই চেনে।
শিক্ষক মাওলানা হোসাইন আহমদ বলেন, মানিকগঞ্জ বাজারে দোকানঘর আমার বাবার মালিকানা। সেখানে আমরা দোকানঘর ভাড়া দিয়েছি। গত বৃহস্পতিবার রাতের আঁধারে রানা মিয়া তার দলবল নিয়ে জোরপূর্বক আমার দোকানঘরের সামনে টিনের বেড়া দিয়ে দেন। শুক্রবার আমি বাজার বণিক সমিতি ও উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে বিষয় জানাই।
শনিবার দোকানের সাটার খুলতে গেলে রানা মিয়া দাঁ হাতে নিয়ে আমাকে মারতে আসেন। এক পর্যায়ে তিনি আমাকে দা দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যান। স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। রানা মিয়া আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়েছে।
এরপর আমার বোন বাদী হয়ে ফেঞ্জুগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সূত্রে আরও জানায়, শনিবার গভীররাতে ফেঞ্চুগঞ্জ থানা পুলিশের সদস্যরা আসামীদেরকে গ্রেফতার করতে উপজেলার মানিকোনা গ্রামে যান। মানিকোনা গ্রামের বাড়ি থেকে পুলিশ সদস্যরা দুই আসামীকে গ্রেফতার করেন। অন্যান্য আসামীর পুলিশের খবর পেয়ে পালিয়ে যায়।
এদিকে দারুল আরকাম মাদরাসা শিক্ষকের ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় “বাংলাদেশ দারুল আরকাম শিক্ষক কল্যাণ সমিতি (বাদাশিকস)” কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে সভাপতি মুফতী জয়নুল আবেদীন এর তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট জেলা কমিটিকে গুরুতর আহত শিক্ষকের খোজ-খবর সহ সকল সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করেছেন।
উক্ত ন্যক্কারজনক ঘটনায় আরও তিব্র নিন্দাও প্রতিবাদ জানিয়েছে “বাদাশিকস মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ” এর পক্ষ থেকে যুগ্ন আহবায়ক হাফেজ মাওলানা মো. সাখাওয়াত হোসেন (এমএসএস)।
তিনি দোষী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। ফেঞ্চুগঞ্জ থানা সূত্রে জানা যায়, উক্ত ঘটনায় দুইজন আসামী গ্রেফতার হয়েছেন। মামলার বাকী আসামীদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
প্রতিনিধি……..
দৈনিক ভোরের বার্তা
About Author
Leave a reply
You must be logged in to post a comment.