ছেলের বিলাস বহুল বাড়ীতে ঠাঁই হলো না মা “বিবা রাণীর-দৈনিক ভোরের বার্তা
ভোলায় ছেলে প্রধান শিক্ষক রয়েছে আলিসান বাড়িঘর তাতে ঠাঁই মেলেনি মায়ের। অবজ্ঞা করে বয়োবৃদ্ধ মাকে রেখেছেন ঝুপড়ি ঘরে ।
প্রতিটি ধর্মেই বাবা মায়ের সেবাযত্ন করা সন্তানদের প্রতি নির্দেশনা দিয়েছেন কিন্তু অনেক সন্তানের বিয়ের পর অযত্নে অবহেলায় মানবেতর জীবনযাপন করতে হয় বাবা মা’র।
তেমনি ভোলা সদর উপজেলা উত্তরদিঘলদী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের যুগিনগর এলাকায় ছেলের দালান ঘরে ঠাই না হওয়ায় পরিত্যক্ত একটি ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বৃদ্ধা বিবা রাণী।
মঙ্গলবার সকালে সরজমিন যুগিনগর এলাকায় গিয়ে জানাযায়, শহীদ সালাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরল কুমার নিখিলের বাবা প্রাণ গোপাল আনুমানিক ২ বছর বয়সে নিখিল কে রেখে মৃত্যুবরণ করেন।
একমাত্র সন্তানের সুখের দিকে তাকিয়ে, সন্তান কে প্রতিষ্ঠিত করতে নিজের সুখ কে বিসর্জন দিয়েছেন নিখিলের মা বিবা রাণী দাশ।
মানুষের মত গড়ে তুলেছেন সন্তান কে, দিয়েছেন মানুষ গড়ার মত চাকুরী কিন্তু কে জানতো নিখিল শিক্ষিত হলেও তার মধ্যে মনুষ্যত্ব হয়নি।
প্রতিষ্ঠিত হয়ে বিয়ে করেন নিখিল দিপোনা রাণী দাশ কে, নিখিলের স্ত্রী মধ্যজয়গুপি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা।
স্বামী স্ত্রী দুইজনই অন্যদের সন্তানদের শিক্ষা দিচ্ছেন, শিক্ষার্থীদের পড়াচ্ছেন বাবা মায়ের খেদমত কি ভাবে করতে হয় । আর নিজের বিশাল অট্টালিকা দালান ঘরে ঠাই হয়নি বিধবা মা বিবা রাণীর। সুপারি বাগানের মধ্যে নিখিলের ঘরের পিছনে ছোট নোংড়া ঘরে বসবাস করেন মা।
মনুষ্যত্বহীন নিখিল আর তার স্ত্রী দিপোনী রাণী দাশ বিবা রাণী কে এতটাই অযত্নে রাখছেন যে মায়ের ঘরের দরজাটা ও নিখিলের ঘরমুখী রাখেননি।
নিখিলের চাচা সূর্য গোপাল দেবনাথ বলেন, আমার ভাতিজা নিখিল কে তার বাবা এক পা দুই পা হাঁটে এমন রেখে মারা গেছে, মারা যাওয়ার পর আমার ভাইয়ের স্ত্রী নিখিলের মা বিবা রাণী অনেক কষ্ট করে নিখিল কে পড়াশোনা করিয়েছে, আজ নিখিল একটি হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক তার স্ত্রী ও শিক্ষিকা আর নিখিলের মা পরিত্যক্ত একটি ঘরে থাকে।
নিখিলের শ্যালিকা সাবেক পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সুরুচি রাণী দাশ বলেন, আমার বোনের শাশুড়ী দালান ঘরে থাকেন না তাই এখানে রাখছে, ঘরটি পরিত্যক্ত কেনো এবং ঘরের দরজা নিখিলের ঘরের দিকে নাই কেনো জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে গিয়ে বলেন আমার বোনের শাশুড়ী বৃদ্ধা মানুষ মাঝেমধ্যে সবার বাড়ীতে চলে যায় তাই মাঝখানে কয়েকদিন তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
এতটা অমানবিক তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে এমন প্রশ্ন করলে তিনি এড়িয়ে যান। নিখিলের চাচি বলেন, আমার এই বাসুরের স্ত্রী নিখিল এর সুখের জন্য নিজের জীবনের সকল সুখ বির্সজন দিয়েছেন আর আজ নিখিলের ঘরে তার মায়ের স্থান হয়নি।
এ বিষয়ে শহীদ সালাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরল কুমার নিখিল এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন আমার মাকে কোথায় রাখবো সেই বিষয়টি আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার এটা আপনাকে জানাবো কেনো? আপনি কে?
ভোলা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমাকে কেউ বিষয়টি অবগত করেনি আপনি যেহেতু বলছেন বিষয়টি দেখবো।
শফিক খাঁ
দৈনিক ভোরের বার্তা
About Author
Leave a reply
You must be logged in to post a comment.
কবিতা: অনুতপ্ত হতে হবে