কবিতা-মা
কবিতা–মা
ইসমাইল হোসেন ফরিদ
সিনিয়র শিক্ষক
ফরিদপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
মায়ের চেয়ে বড় আপন
এ ধরায় কে আছে?
ভেবেছিস কখনো, কতটা ঋণী
তুই তাঁর কাছে?
সবাই যখন ডুবে থাকে
গভীর নিদ্রার মাঝে,
নিদ্রাবিহীন মা তখনো
ব্যস্ত থাকে কাজে।
সন্তান কি তাঁর কষ্ট পাচ্ছে
কোনোভাবে ভিজে?
মায়ের চোখ সারাক্ষণই
থাকে তারই খোঁজে।
অসুখ হলে বলতো কার
কাটে নির্ঘুম রাত?
ক্ষণে ক্ষণে মাথায় তোর
বুলায় কে তাঁর হাত?
নিজের পেটে পাথর বেঁধে
সন্তানকে দেয় দানা,
জীবনটা সে দিতে পারে
রুখতে শত্রুর হানা।
তোর চোখে দেখলে সে
একটু অশ্রুজল,
চোখ বেয়ে নামে তাঁর
শ্রাবণ মাসের ঢল।
বাইরে গেলে সন্তান তাঁর
আনচান করে মন,
দুশ্চিন্তাতে বসে থেকে
কাটে সারাক্ষণ।
‘বুকের ধন’ ফিরলে ঘরে
নিয়ে হাসি মুখ,
হাজার কষ্ট থাকলেও তাঁর
জুড়িয়ে যায় বুক।
রোগ যন্ত্রণা চেপে রেখে
মেটায় কে তোর দাবী?
বিনা পয়সায় এমন চাকর
আর কোথায় তুই পাবি?
মৃত্যুর পূর্বেও চায় সে
সন্তান ভালো থাক,
তাঁর ভালোবাসায় কখনো
পেয়েছিস কি ফাঁক?
মা আছে তাই
জগতটাকে লাগছে এতো ভালো,
মা না থাকলে ভুবনটাই তোর
হয়ে যাবে কালো।
শিক্ষিত সব শয়তানের দল
মায়ের খবর রাখিস?
মাকে ফেলে কাকে নিয়ে
সারাক্ষণ তুই থাকিস?
চোখ রাঙিয়ে বলিস তাঁকে
যখন খুশি যা,
মায়ের পায়ের নিচে জান্নাত
জানিস না কি তা?
বৃদ্ধাশ্রমে রেখে মাকে
খুঁজিস রে তুই সুখ,
নরাধম তুই, কখনোই কি
কাঁপেনা তোর বুক?
গ্যাড়াকলে পড়ে ছেলে
থাকলে কারাগারে,
তাকে সেথায় রেখে কি মা
ভালো থাকতে পারে?
আর আশ্রম নামক কারাগারে
বসে থেকে মা,
ফ্যালফ্যালিয়ে তাকিয়ে থাকে
অভিশাপ করে না।
বৃদ্ধাশ্রমে থেকেও মা
খোদার কাছে মাগে,
তাঁর সন্তান সবসময়ই
সুখে যেন থাকে।
মায়ের মতো এমন দরদী
আছে কি রে আর ?
তাঁর সেবা না করে তুই
কেমনে হবি পার?
লেখকঃ-ইসমাইল হোসেন ফরিদ
দৈনিক ভোরের বার্তা
About Author
Leave a reply
You must be logged in to post a comment.
কবিতা: অনুতপ্ত হতে হবে