আত্মশুদ্ধির মাস রমজান সকল বিভেদ ভূলে আসুন অসহায়দের জন্য কাজ করি- মুহাঃ সরোয়ার হোসেন


১০ই রমজান শেষ হয়ে গেল এখনো পিছনের সব কিছু ভূলে আল্লাহর দেওয়া বিধানুযায়ী চলতে পারছি কিনা নিজেকে প্রশ্ন করলে হয়ত উত্তর পেয়ে যাবো।
রমজান মুসলিম উম্মাহর জন্য রহমত, বরকত, নাজাতের দ্বার উন্মোচিত করে। তাকওয়া ও আত্মশুদ্ধির অবারিত সুযোগ তৈরি করে দেয়। আর মুসলিম উম্মাহর অন্তরে আল্লাহর ভয় জাগ্রত ও সংস্কৃতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করে। মুসলিম উম্মাহর গুনাহ মাফের মোক্ষম হাতিয়ার হলো রমজান।
বর্ষার প্রথম বৃষ্টি যেমন সকল ময়লা আবর্জনা দুয়ে মুছে মাটিকে পরিচ্ছন্ন করে দেয়, ঠিক একইভাবে রমজান মানুষের পাপতাপ জ্বালিয়ে পুড়িয়ে পরিশুদ্ধ করে দেয়।
রমজান মাসে সিয়াম (রোজা) পালন করার সময় মুসলিমদের কিছু কাজ থেকে বিরত থাকতে হয়, যেগুলো রোজার শর্তের মধ্যে পড়ে। এখানে প্রধান কিছু কাজের কথা বলা হল, যেগুলো থেকে আমাদের সকলকেই বিরত থাকা উচিৎ।
খাওয়া বা পান করা: সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাওয়া বা পান করা সম্পূর্ণভাবে নিষেধ।
মদ্যপান: মদ বা অন্যান্য কোনো মাদকদ্রব্য গ্রহণ করা নিষেধ।
যৌন সম্পর্ক: রোজার সময় দিনের বেলায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যৌন সম্পর্ক নিষিদ্ধ।
তামাক বা সিগারেট খাওয়া: তামাক, সিগারেট বা অন্য কোনো ধরনের ধূমপান করা রোজার সময় নিষেধ।
অপ্রাসঙ্গিক বা নিন্দনীয় কথাবার্তা বলা: মিথ্যা বলা, গালি-গালাজ করা, খারাপ ভাষায় কথা বলা, এবং মন্দ কথা বলা থেকে বিরত থাকা উচিত।
অন্যের প্রতি ক্ষতিকর আচরণ: কাউকে দুঃখ দেয়া, অপমান করা, বা কষ্ট দেয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।
অধিক ঘুমানো বা অলসতা: রোজার সময় বেশি ঘুমানো বা অলস থাকা ভালো নয়, কারণ রোজার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আত্মবিশ্লেষণ ও ঈশ্বরের প্রতি পরিপূর্ণ মনোযোগ দেওয়া।
এছাড়া, রোজার সময় ভালো কাজ করা যেমন নামাজ পড়া, কোরআন তিলাওয়াত করা, দান করা ইত্যাদি বেশি গুরুত্বপূর্ণ। রমজান ইসলামের পবিত্রতম মাস। এই মাসে মুসলিমরা সারা দিন রোজা রাখে, অর্থাৎ সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাবার ও পানীয় থেকে বিরত থাকে। রোজা শুধু শারীরিক উপবাস নয়, বরং এটি আত্মিক পরিশুদ্ধির একটি মাধ্যমও। রোজা রাখার মাধ্যমে মুসলিমরা আল্লাহর প্রতি তাদের আনুগত্য প্রকাশ করে এবং তার কাছ থেকে ক্ষমা ও মঙ্গল লাভের আশা রাখে।
রমজান মাসে মুসলিমরা বেশি করে ইবাদত, দোয়া, তিলাওয়াত ও সৎ কাজের দিকে মনোযোগ দেয়। ইসলামে রমজান মাসের মধ্যে রয়েছে লাইলাতুল কদর, যা কোরআন শরিফের অবতীর্ণ হওয়ার রাত হিসেবে বিবেচিত। এই রাতটি অত্যন্ত বরকতময়, এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
রমজান শেষে মুসলিমরা ঈদুল ফিতর উদযাপন করে, যা একটি আনন্দদায়ক উৎসব। এই দিনে রোজা ভাঙার পাশাপাশি একে অপরকে উপহার দেয়া, পরিবারের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করা এবং সমাজে দান-খয়রাত করা হয়।
এছাড়া, রমজান মাসে দান খয়রাত ও সামাজিক সহায়তা অনেক বেশি হয়ে থাকে, কারণ এই মাসে আল্লাহর কাছ থেকে আরও বেশি বরকত পাওয়ার জন্য আসুন আমরা বেশি দানে আগ্রহী হই।
নিজস্ব প্রতিবেদন
দৈনিক ভোরের বার্তা
About Author
Leave a reply
You must be logged in to post a comment.