আন্তর্জাতিক নারী দিবসে হরিরামপুর কৃষি ফসলের মেলা অনুষ্টিত DBB


অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন, নারী ও কন্যার উন্নয়ন”এই প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলা চরাঞ্চল পাটগ্রামচর গ্রামে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত হয়।
নারী দিবসে কৃষি প্রতিবেশ চর্চায় টেকসই কৃষিতে নারীদের অবদান “স্থানীয় অভিযোজন বিষয়ক ফসল বৈচিত্র্য” মেলা-২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়। মেলায় এলাকার কৃষক-কৃষানী তাদের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় যে সকল ফসল ভুমিকা রাখে সেগুলো নিয়ে বিভিন্ন ধরনের ষ্টলের পরসা বসান। চরাঞ্চলে উৎপাদিত ফসল গম, পায়রা, মাসকলাই, খেসারী কলাই, মুসরি, ধনিয়া সজ, রাধুনি কালোজিরা, সরিষা আলু রসুন পেয়াজ মরিচ মিষ্টি কুমড়া বিভিন্ন ধরনের সবজি বীজ ভেষজ ওষুধি ষ্টল এ সময় র্যা লি ও আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়। নারী দিবসে সভাপতিত্ব করেন, শতবাড়ির কৃষক খালেদা বেগম।
এ ছাড়াও এলাকার কৃষক শতবাড়ির কৃষক, শিক্ষার্থী মৎস্যজীবি, ইউপি সদস্য, ব্যবসায়ী সহ শতাধিক মানুষ অংশগ্রহন করেন। আলোচনা সভায় ইউপি সদস্য শাহিন মোল্লা পাটগ্রামচর তিনি বলেন, বিশ্ব নারী দিবস সারাদেশে পালিত হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রত্যান্ত চরাঞ্চলে এই দিবসটি পালন করার জন্য বারসিক ও এলাকার কৃষক নারী পুরুষ সবাইকে অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন।
বিশেষ করে যারা কৃষির বিভিন্ন ফসল নিয়ে এই মেলায় অংশগ্রহন করেছেন তাদের প্রশংসা করে বলেন, এই সকল কাজের মধ্যে দিয়ে সমাজের নারীদের কাজের গুরুত্ব বুঝা যায় । আসলে নারীরা পরিবারে, সমাজে, রাষ্টে অনেক ভুমিকা রাখে। তাই নারীদের সাথে নিয়ে উন্নয়ন করতে হবে। নারীদের কাজের মর্যাদা দেওয়া উচিত এবং সমাজে নারী পুরুষ উভয়কে সমানভাবে মর্যাদা দেওয়া দরকার ।
কৃষক খালেদা বেগম বলেন, চরে প্রতি বছর বন্যা, নদীভাঙ্গন আরো অনেক দুর্যোগ হয়। প্রতি নিয়ই আমাদের ফসলের ক্ষতি করে । তাই আমরা স্থানীয় জাতের ফসলের বীজ ঘরে রাখি এবং সময়মত চাষাবাদ করতে পারি। আলোচনায় আরো অংশগ্রহন করেন, পাটগ্রমাচর শতবাড়ির কৃষক রেজ্জাক মোল্লা, লিপি বেগম , বারসিক প্রোগ্রাম অফিসার সত্যরঞ্জন সাহা ও মুকতার হোসেন।
এই দিবসটি উদ্যাপনের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ইতিহাস। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে মজুরিবৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধরা।বাদ জানাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের রাস্তায় নেমেছিলেন সুতা কারখানার নারী শ্রমিকেরা।
সেই মিছিলে চলে সরকার লেঠেল বাহিনীর দমন-পীড়ন। ১৯০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত নারী সমাবেশে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন হলো। ক্লারা ছিলেন জার্মান রাজনীতিবিদ; জার্মান কমিউনিস্ট পার্টির স্থপতিদের একজন। এরপর ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। ১৭টি দেশ থেকে ১০০ জন নারী প্রতিনিধি এতে যোগ দিয়েছিলেন।
এ সম্মেলনে ক্লারা প্রতি বৎসর ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেন। সিদ্ধান্ত হয়ঃ ১৯১১ খ্রিস্টাব্দ থেকে নারীদের সম-অধিকার দিবস হিসেবে দিনটি পালিত হবে। দিবসটি পালনে এগিয়ে আসে বিভিন্ন দেশের সমাজতন্ত্রীরা। ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ মার্চ পালিত হতে লাগল। বাংলাদেশেও ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে স্বাধীনতার লাভের পূর্ব থেকেই এই দিবসটি পালিত হতে শুরু করে। অতঃপর ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায় জাতিসংঘ। এরপর থেকে সারা পৃথিবী জুড়েই পালিত হচ্ছে দিনটি নারীর সমঅধিকার আদায়ের প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করার অভীপ্সা নিয়ে। সারা বিশ্বের সকল দেশে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস।
নাসির উদ্দিন, হরিরামপুর প্রতিনিধি:
দৈনিক ভোরের বার্তা
About Author
Leave a reply
You must be logged in to post a comment.