ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগে কঠোর পদক্ষেপ, অশান্তি বরদাস্ত নয়-ডঃ ইউনূস DBB


দ্বিতীয় বিবৃতি দিল ইউনূসের সরকার ধানমন্ডিতে মুজিবের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় বৃহস্পতিবার প্রথম বিবৃতি দিয়েছিল অন্তর্বর্তী সরকার। শুক্রবার এল দ্বিতীয় বিবৃতি। এর মাধ্যমে দেশের অন্দরে কঠোর অবস্থান স্পষ্ট করতে চাইলেন ইউনূস।
বাংলাদেশে দিকে দিকে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় কঠোর পদক্ষেপ করা হবে। এই ধরনের অশান্তি বরদাস্ত করা হবে না। ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় দ্বিতীয় বিবৃতি দিল মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। বৃহস্পতিবার রাতে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের সমাজমাধ্যমে এই বিবৃতি পোস্ট করা হয়েছে।
বাংলাদেশে বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনায় উদ্বিগ্ন অন্তর্বর্তী সরকার। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘অন্তর্বর্তী সরকার গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে, কতিপয় ব্যক্তি এবং গোষ্ঠী দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালানো এবং অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করছে। এই ধরনের কর্মকাণ্ড সরকার শক্ত হাতে প্রতিহত করবে।’’উস্কানির মাধ্যমে দেশে অশান্তি সৃষ্টি বরদাস্ত করবে না ইউনূসের সরকার।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘‘বাংলাদেশের নাগরিকদের প্রাণ এবং সম্পত্তি রক্ষায় প্রস্তুত অন্তর্বর্তী সরকার। উস্কানিমূলক কাজের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলার চেষ্টা হলে তার জন্য দায়ী ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ করবে আইনশৃঙ্খলারক্ষী বাহিনী। দোষীদের বিচারপ্রক্রিয়ার মুখোমুখি দাঁড় করানো হবে।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বাংলাদেশের জনতার উদ্দেশে লিখেছেন, ‘‘থামুন। শান্ত হোন। সরকারকে কাজ করতে দিন। বিচার ও সংস্কার হবেই। আপনারা গালি দিলেও বলব, থামুন।’’
বুধবার রাত থেকে বাংলাদেশের কিছু অংশে নতুন করে অশান্তি ছড়িয়েছে। হাসিনা ভার্চুয়াল মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন বলে ঘোষণা করেছিল আওয়ামী লীগ। তার ফলেই ক্ষুব্ধ হন হাসিনা-বিরোধীরা। ৩২ ধানমন্ডিতে মুজিবের বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পরে তাঁরা মুজিবের স্মৃতিবিজড়িত ওই বাড়ি ভাঙচুর করেন, আগুন ধরিয়ে দেন।
রাতে ক্রেন এনে বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার কাজ শুরু হয়। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত সেই কাজ চলেছে। ধানমন্ডিতে আগুন লাগানো হয়েছে হাসিনার বাড়ি সুধা সদনেও। দেদার লুটপাট করা হয়েছে। ৩২ ধানমন্ডিতে ধ্বংস করা হয়েছে মুজিবের স্মৃতিতে তৈরি মিউজ়িয়াম।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতি দিয়েছিল অন্তর্বর্তী সরকার। তাতে বলা হয়েছিল, হাসিনার ‘সহিংস আচরণের প্রতিক্রিয়া’-তেই ভাঙচুর করা হয়েছে মুজিবের বাড়িতে। দাবি, ‘ভারতে বসে’ হাসিনা জুলাইয়ের গণআন্দোলন নিয়ে যে ‘প্ররোচনামূলক’ মন্তব্য করেছেন, তারই প্রভাব পড়েছে মানুষের উপর। হাসিনা যাতে ভারত থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তৃতা করতে না-পারেন, নয়াদিল্লিকে তা নিশ্চিত করতে লিখিত অনুরোধও করেছে ঢাকা। তলব করা হয়েছে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় উপরাষ্ট্রদূতকেও।
তবে দ্বিতীয় বিবৃতির মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরে কড়া অবস্থান স্পষ্ট করতে চাইল ইউনূসের সরকার। তবে দ্বিতীয় বিবৃতি যখন এল, তত ক্ষণে দেশের অনেক এলাকাতেই ভাঙচুর করে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে মুজিব এবং তাঁর কন্যার বাড়ি। রেহাই পাননি তাঁদের অত্মীয়েরাও। আওয়ামী লীগের বহু নেতার বাড়িতেও হামলা হয়েছে, ভাঙচুর চালানো হয়েছে।
৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়ি ভেঙে দেওয়া নিয়ে ফের মুখ খোলেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ নেত্রী বলেন, “বাড়িটি তো আমরা ভোগ করিনি। সেটি তো স্মৃতি হিসাবে ছিল। স্বাধীনতার স্মৃতিস্তম্ভ। একে একে সব ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে।” তিনি যোগ করেন, “যতটুকু স্মৃতি ছিল, সেটুকুও ভেঙে গুঁড়িয়ে দিল। কিন্তু আমাদের মনের মণিকোঠায় জাতির পিতা চিরদিন জাগ্রত থাকবেন। তা কোনও দিন মুছতে পারবে না।”
নিজস্ব প্রতিবেদন
দৈনিক ভোরের বার্তা
About Author
Leave a reply
You must be logged in to post a comment.