ভোলায় রাতের আধাঁরে বাসায় ঢুকে গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা
গতকাল ১৪ মে দিবাগত রাতে ভোলা সদর উপজেলার ২নং ইলিশা ইউনিয়নের৩ নং ওয়ার্ডের কাদের সাজির ছেলে তছির সাজির বসত ঘরে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত গৃহবধূর নাম কুলসুম (৪০)। তিনি কাদের সাজির পুত্র তছির সাজির ম্ত্রী ও পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের আলী মাঝির কন্যা বলে জানাগেছে। গৃহবধূর স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, কুলসুম তার তিন সন্তান নিয়ে রাতে নিজ বসত ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন রাতের আঁধারে যেকোন সময় দৃর্বৃত্তরা তার ঘরে ঢুকে এ হত্যার ঘটনা ঘটায়।
আজ ভোর ৬ টার দিকে খবর পেয়ে ইলিশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ গোলাম মোস্তফা ঘটনা স্থলে পৌছেন ভোলা সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহিন ফকির ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে। সরেজমিন সকাল ৮ টায় নিহতের বাড়ি ইলিশার সাজিকান্দি গিয়ে দেখা যায় নিহত গৃহ বধু কুলসুমের মরদেহ তার শয়নকৃত চৌকিতে পরে আছে।
নিহত গৃহবধূর স্বামী তছির,বাশুর বশির,দেবর ইউনুস,ছেলে হানিফ, মা ও ভাই ঘটনাস্থলে এসে হাজির হয়েছেন। নিহত কুলসুমের বাপের বাড়িতে প্রতিপক্ষের মামলার ভয়ে শশুর বাড়িতে পালিয়ে থাকা স্বামী তছির ম্ত্রীর মৃত্যুর খবর পেয়ে বাসায় ফিরেছেন। পুলিশ সদস্যরা নিহতের স্বজন ও স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য নিচ্ছেন।
নিহতের সাথে একই চৌকিতে ঘুমানো তার ১০/১২ বছরের ছেলে রাহাত বলেন আমি ঘুমিয়ে ছিলাম কিছুই দেখিনি সকালে আমার চাচাত ভাই ফরিদ এসে আমাদের জাগালে মশারির ভিতর থেকে উঠে আমি দরজা খুলে এশে মাকে ডাকলে দেখি মায়ের মাথার কাছে ভেজা আমি ভাবছি মা বমি করছে পরে দেখি রক্তে ভিজা মা মরে আছে।
নিহত গৃহবধূর বড় ছেলে হানিফ বলেন, আমার মায়ের সাথে আমার সর্বশেষ দেখা ও কথা হয় রাত অনুমান ৮টার দিকে পরে আমি বাগদা চিংড়ি ধরতে নদীতে চলে গেছি। আমার মা কাল সন্দায় আমার নানা বাড়ি থেকে এসেছে রান্না বান্না করেনি তাই আমরা সবাই না খেয়ে ছিলাম রাতে। পরে আমি নৌকায় চলে গেলে সকালে এক প্রতিবেশি আমাকে নৌকায় গিয়ে মায়ের মৃত্যুর খবর দেয়। আমি এশে বাড়িতে অনেক লোক দেখি ঘরে ঢুকে মায়ের গলাকাটা মরদেহ দেখতে পাই।
নিহতের দেবর ইউনুস(২৬) বলেন ২৮এপ্রিল ২০২৩ বিকাল পাঁচটার দিকে আমাদের সাথে প্রতিবেশী কাওছার, বিল্লাল, আক্তার, কামাল,জামাল, ছিদ্দিক গঙদের সাথে বন্ধকি জমি নিয়ে বিরোধের জেরে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। ঐ ঘটনায় উভয় পক্ষের ভোলা সদর থানায় মামলা চলমান রয়েছে। আমরা সকল ভাই তাদের মামলায় অভিযুক্ত আসামি থাকায় পালিয়ে ছিলাম পুলিশের ভয়ে বাড়ি ছিলাম না। আমাদের প্রতিপক্ষরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানান ইউনুস।
একই কথা বলেন ইউনুসের বাবা আঃ কাদের সাজি।নিহতের ভাই বলেন আমার ভগ্নিপতি তছির প্রতিপক্ষের মামলার ১নং আসামি বলে আমার বাসায় পালিয়ে ছিলেন, রাত ১২টার থেকেই ভগ্নিপতি তছির আমাদের বাড়িতে ভারসাম্যহীন দইছই করতে দেখলে তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলেন আমার ভালো লাগেনা, আমার বাসায় যে কোন বিপদ ঘটছে বলে আমার মনে হয়। আমার বুকটা ধরপর করতাছে। রাত বেশি হওয়ার তাকে একা বাড়ি পাঠানো সম্ভব হয়নি বলে জানান তছির সাজি শ্যালক।
নিহতের স্বামী ইউনুস ও বাশুর বশির সাজি বলেন কুলসুমের গলালাশ ঘরের চৌকিতে পড়ে থাকার খবর পেয়ে তারা এসেছেন। বশির বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডে কাকে যে সন্দেহ করব, সেটাই বুঝতে পারছি না। তবে যে বা যারা আমার ভাইয়ের বউকে এমনভাবে হত্যা করেছে, আমি তাদের বিচার চাই।
হত্যার বিষয়ে ভোলা সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ শাহিন ফকির বলেন গৃহবধূকে হত্যার লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করা হবে পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট অনুযায়ী আইনি উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে এবং হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন।
শফিক খাঁন
দৈনিক ভোরের বার্তা
About Author
Leave a reply
You must be logged in to post a comment.