প্রতারনা করেই ফিরোজ লুপে নিলেন সরকারি চাকরি
ভোলায় নিজের স্থায়ি ঠিকানা গোপন করে ঢাকায় অভিনব কৌশলে ভুঁয়া ঠিকানা লিপিবদ্ধ করন ও মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে সরকারি চাকরিতে যোগদানের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেন একজন আইনজীবী।
জালিয়াতির মাধ্যমে ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এমএলএসএস (পিয়ন) পদে চাকরি করছেন মো. ফিরোজ নামের এক কর্মচারি।
ভোলা জেলার স্থায়ী বাসিন্দা হয়েও ভূয়া কাগজপত্র তৈরির মাধ্যমে ঢাকার স্থায়ী বাসিন্দা দেখিয়ে তিনি এ পদে চাকরি নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে ।
এ ব্যাপারে গত ২১ মার্চ ২০২৩ ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশন সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন ঢাকা বারের নুরে আলম নোমান নামের একজন বিজ্ঞ আইনজীবী। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নজরে আসলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
অ্যাড. নুরে আলম নোমান লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ঢাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে এমএলএসএস পদে এক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। ঐ বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ থাকে যে শুধুমাত্র ঢাকা জেলার বাসিন্দাদের উল্লেখিত পদে আবেদনের জন্য আহ্বান করা হয়।
মো: ফিরোজ ভোলা জেলার চরফ্যাসন উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা। তার পিতার নাম মো. ইউছুপ, মায়ের নাম ময়ফুল। স্থায়ী ঠিকানা ভোলার চরফেশন উপজেলার আব্দুলাহ পুর ইউনিয়নের আমিনাবাদ, ওয়ার্ড নং ৯, ডাকঘর আমিনাবাদ। শুধু তা-ই নয় তার বাপ-দাদার স্থায়ী ঠিকানাও জেলার একই এলাকায় ।
ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশনে ফিরোজ ভোলা জেলার বাসিন্দা হওয়ার কারণে প্রথমে তাকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দেয়নি। পরে তিনি ঢাকার জনৈক অহিদউল্লাহকে ভূয়া মামা পরিচয় দিয়ে ও তার পালক সন্তান দেখিয়ে আবার কাগজপত্র জমা দেন।
এভাবে প্রতারণার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রভাবিত করে ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এমএলএসএস পদে চাকরিতে নিয়োগ লাভ করেন ফিরোজ।
এ পদের চাকরিতে দীর্ঘ অর্ধযুগ ধরে বহাল তবিয়তে থাকাকালীন তার নানা পরিবর্তন লক্ষ্যনীয় হয়ে ওঠে। চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারি পদে চাকরিতে তার বেতনের আয়ের সাথে ব্যয়ের কোন সামঞ্জস্যতা নেই বলে জানান ঐ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রিন্স।
ফিরোজের কোটি টাকা ব্যায়ের জমি ক্রয়, ও ইমারত নির্মাণ নিয়ে নানা মনে প্রশ্নের সঞ্চারঘটে । ইতোমধ্যে তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জে ৫ কাঠা জমি ক্রয় করে বাড়ি নির্মাণসহ চরফ্যাসন পৌর এলাকায় উচ্চমূল্যে ৬ কাঠা জমি কিনে ইমারত নির্মান করেছেন বলেও অভিযোগে বলা হয়েছে। তবে উল্লেখিত অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেন আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রিন্স।
চেয়ার প্রিন্স আরো জানান ফিরোজ দাখিল ও আলীম পাশ করেন চরফ্যাসন আমিনাবাদের মাদ্রাসা থেকে। ফিরোজের অন্য সব ভাইবোন স্থায়ীভাবে ভোলার চরফ্যাসনের আমিনাবাদ গ্রামেই বসবাস করেন।
ফিরোজের নামে চরফ্যাসন উপজেলার ৫ নং আমিনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নাগরিক সনদের কপিও রয়েছে। উপরোক্ত তথ্যাদিতে প্রতিয়মান হয় যে ফিরোজ ভোলা জেলার চরফ্যাসন উপজেলার আমিনাবাদ গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা।
তার এসব প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড ও মিথ্যা-জালজালিয়াতির তথ্য দিয়ে চাকরিতে বহাল থাকায় রাষ্ট্রের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগে তুলে ধরা হয়েছে। যা ফৌজদারি অপরাধের শামিল বলে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করা হয় অভিযোগ পত্রে।
ব্যাপারে জানতে ঢাকা জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ অভিযোগটি আমার নজরে আসেনি। তিনি খবরটি প্রকাশ করার কথা জানান। অভিযোগপত্রটি তার অফিসিয়াল ইমেইলে দেয়ার কথাও জানান তিনি ।
ভোলা প্রতিনিধি:
দৈনিক ভোরের বার্তা
About Author
Leave a reply
You must be logged in to post a comment.