কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে স্মৃতি বিজড়িত বট গাছের চারা রোপন


ছোটবেলায় গ্রামের বাড়িতে প্রকৃতির কোলেই বড় হয়ে ওঠা। পড়াশোনা খেলাধুলা সবকিছুই গাছের তলায়, গাছের উপরে। সকালবেলা ঘুম ভাঙতো পাখির ডাকে।
প্রতিদিন কত নতুন নতুন পাখির সাথে পরিচয়! সময় কেটেছে। জীবন যেমন বদলেছে ঠিক সেভাবেই বদলেছে পরিবেশ। গাছের সংখ্যা কমেছে। চেনা পাখির ডানার ঝাপট, গলার আওয়াজ এখন আর শোনা যায় না। সেই সমস্ত ছোটবেলার হারিয়ে যাওয়ার বন্ধুদের আবারও ফিরিয়ে আনার জেদ চেপে বসে ইউপি চেয়ারম্যান ফকির মোঃ বেলায়েত হোসেন মনের মধ্যে।
বিগত বছরগুলি লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, গাছ লাগানোয় সচেতনা বেড়েছে ফরিদপুর বাসীর। একদিকে যেমন বেড়েছে বৃক্ষরোপণ, তেমনি আমফান, ইয়াসের জেরে যথেষ্ঠ ক্ষতি হয়েছে প্রকৃতির। উপড়ে গিয়েছে বহু গাছ, ভিটে হারিয়েছে গাছের আশ্রয়ে থাকা বহু প্রাণী-পাখি। তাই সব দিক ভেবেচিন্তে গাছ লাগানোয় নজির স্থাপন করছেন পেশায় জনপ্রতিনিধি, কিন্তু কাজে পরিবেশ বাঁচানোর কাণ্ডারিও ইউপি চেয়ারম্যান ফকির মোঃ বেলায়েত হোসেন।
আজ ১ সেপ্টেম্বর ২০২২ইং রোজ: বৃহস্পতিবার দুপুরে কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বাবু রতন শিকদার নিতাই এর উপস্থিতিতে ইউপি চেয়ারম্যান ফকির মোঃ বেলায়েত হোসেন একটি বট গাছের চারা রোপণ করেন।
এসময় তিনি বলেন, সব গাছ নয়, প্রকৃতিকে বাঁচাতে বট গাছ লাগান। তাঁর কথায়, ‘এর মূলত তিনটি কারণ আছে প্রথমত বটগাছ বহু শত বছর বাঁচে। এমনকি এর মূল গুড়ি নষ্ট হয়ে গেলে গাছ থেকে চারিদিকে যে ঝুড়ি নামে সেগুলো পরে গুড়ি হয়ে যায় আর গাছটিকে বহুশত বছর বাঁচতে সাহায্য করে, যেমন কাশিমাবাদ, ফুরসা, রনকাইল সহ বিভিন্ন গ্রামে অনেক পুরোনো বট গাছ রয়েছে।
সেই সঙ্গে এই বটগাছের ছায়া যেমন মানুষের খুব পছন্দ, বিভিন্ন পাখি তারা এই গাছে বাসা করতে ভালোবাসে। কারণ বট গাছ অনেক শক্ত হয়, ঝড়ঝাপ্টা সহ্য করার অনেক ক্ষমতা থাকে। ফলে পাখির বাসা যেহুতু প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সাধারণত নষ্ট হয় না, তাই অধিকাংশ পাখিই এই বটগাছে তাদের বাসা বানাতে পছন্দ করে।
ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তিনি নিরবিচ্ছিন্নভাবে ইউনিয়নের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, ধর্মীয় উপাসনালয় এবং রাস্তা সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকাতে, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে, নিজের প্রচেষ্টাতেই বৃক্ষ রোপন করে চলেছেন। সংখ্যাটাও নেহাত কম হলো না। আজ পর্যন্ত তিনি অসংখ্য গাছ রোপন করেছেন। আমাদের পরিবেশের জীব বিচিত্রে প্রতিটি প্রাণীর, ছোট ছোট পাখিরও, অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে।
বট গাছে যদি বেশী বেশী করে পাখি আসে, বাসা বানায় – সেটা তাদের ও আমাদের অস্তিত্ব রক্ষা করতে সাহায্য করবে। বট গাছের ফল পাখিদের খুব প্রিয় বলে দাবি করেন ইউপি চেয়ারম্যান ফকির মোঃ বেলায়েত হোসেন।
তিনি মনে করেন, বট গাছের কাঠ থেকে যেহেতু কোন আসবাবপত্র তৈরি হয় না, তাই মানুষের আক্রমণ বা মানুষের হাতে বটগাছ কাটা পড়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম থাকে। কিছুটা ধর্মীয় ভাবাবেগে জড়িয়ে থাকে এই বটগাছকে কেন্দ্র করে। ফলে বটগাছের আঘাত কম।
মো: ইনামুল হাসান মাসুম, ফরিদপুর:
দৈনিক ভোরের বার্তা
About Author
Leave a reply
You must be logged in to post a comment.