সালথায় মিতালী বিদ্যা নিকেতনে ম্যানেজিং কমিটি গঠনে প্রধান শিক্ষকের কারসাজি-অভিভাবকদের নির্বাচনের দাবি
ফরিদপুরের সালথা উপজেলার রামকান্তপুর মিতালী বিদ্যা নিকেতন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে চলছে ব্যাপক কারসাজি।
উক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক এনায়েত হোসেন নিজের নিয়ন্ত্রণে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করার লক্ষ্যে চালাচ্ছেন দৌড়ঝাপ ও কারসাজি- এমনই অভিযোগ এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকগণের।
সম্প্রতি তিনি গোপনভাবে ইচ্ছামতো ৫ সদস্যের অভিভাবক সদস্য গঠন করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর প্রেরণ করেন, যা বাকি শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা জানেন না। এমনি উক্ত বিদ্যালয়ে কয়েকজন শিক্ষকই জানেন না, ম্যানেজিং কমিটি গঠনের তফসিল ও নির্বাচনের তারিখ সম্পর্কে।
ঘটনা প্রকাশে জানা গেছে, বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত ম্যানেজিং কমিটি গঠনে কখনো নির্বাচন করার সুযোগ দেয়নি প্রধান শিক্ষক এনায়েত হোসেন। স্থানীয়রা জানায়, প্রতিবারই গোপনে কারসাজির মাধ্যমে প্রধান শিক্ষকের অনুসারীদের নিয়ে এবং তার ভাই, ভাতিজা ও স্ত্রীকে সভাপতি করার লক্ষ্যে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য করে সভাপতি পদটি দখল করে নেন। গত বছরও প্রধান শিক্ষকের আপন ভাই কুদ্দুসকে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি করা হয়।
স্থানীয়রা আরো জানায়, প্রধান শিক্ষকের ভাই ক্দ্দুুসকে কখনো বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভা করতে দেখা যায়নি কিন্তু কাগজপত্র নিয়োগ প্রদানে খাতায় তার স্বাক্ষর রয়েছে। সদ্য ম্যানেজিং কমিটি গঠনের লক্ষ্যে গত ২১ ডিসেম্বর তফসিল ঘোষণা করেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার। কিন্তু ১৫ই ডিসেম্বর থেকে ২৯শে ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুল বন্ধ থাকে।
অপরদিকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়ন পত্র বিতরণ ও জমার তারিখ থাকে। মনোনয়ন জমাদানের শেষের দিকে প্রধান শিক্ষক এনায়েত হোসেন তার অনুগতদের নিয়ে নামমাত্র একটি মিটিং করে সদস্য মনোনয়ন করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে জমা প্রদান করেন।
উক্ত তফসিলের খবর বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের না জানিয়ে প্রধান শিক্ষকের অনুগতদের নিয়ে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করার ঘটনাটি জানাজানি হলে- স্থানীয়রা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কমিটি গঠনের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর আবেদন করেন। অপরদিকে, প্রধান শিক্ষক যে কয়েকজনকে পছন্দ করেন সেই কয়জনকে মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার সুযোগ দিলেও অন্য কারো মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেন না।
তার প্রমাণ মিলে, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে প্রধান শিকক্ষের প্রেরিত তালিকায়। যেখানে কোনো প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীর নাম নেই।’
এদিকে কয়েকজন অভিভাবক জানান, ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন সংক্রান্তে আমাদের জানানো হয়নি। একটি খোলা নোটিশ বোর্ড প্রধান শিক্ষকের বাড়ি থেকে এনে তার প্রয়োজনমতো প্রদর্শন করিয়ে আবার আটকিয়ে রাখেন। তাছাড়া স্কুলও বন্ধ থাকে। বার বার প্রধান শিক্ষক কাউকে না জানিয়ে ঘুপছি কমিটি করে।
আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে আবেদন করেছি, স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করা হোক। ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকেরা সঠিক লোক বেছে নিক। প্রধান শিক্ষক নির্বাচনের বিপক্ষে তদবির করা প্রমাণ মিলে তার কারসাজি ভূমিকায়।
এসব অভিযোগের বিষয়ে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় প্রধান শিক্ষক এনায়েত হোসেন মুঠোফোনে এ প্রতিবেদকের সাথে কথা বলতে নারাজ। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, ‘আপনি স্কুলে আসেন, সকল তথ্য দেবো এবং কথা হবে, মোবাইলের মাধ্যমে আমি কোনো তথ্য দিতে পারবো না। তবে, অভিভাবকদের সিদ্ধান্তে ৫ জন অভিভাবক সদস্যসহ ৯ সদস্যের তালিকা উপজেলায় পাঠানো হয়েছে।’
কোন প্রক্রিয়ায় ঐ ৯ সদস্যের তালিকা করে পাঠানো হয়েছে তার কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি প্রধান শিক্ষক। এ বিষয়ে সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আকতার হোসেন শাহিন সাংবাদিকদের জানান, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
নিজস্ব প্রতিবেদন
দৈনিক ভোরের বার্তা
About Author
Leave a reply
You must be logged in to post a comment.
কবিতা: অনুতপ্ত হতে হবে