বোয়ালমারী ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ-রুমে ঝুলছে তালা


ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা রূপাপাত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মোল্যা (সোনা মিয়া) বিরুদ্ধে অনিয়ম,দূর্নীতি, অফিসের কম্পিউটার কাউকে না জানিয়ে রাব্বিকে দিয়ে নেওয়ার নির্দেশ।
মেম্বরগণ, সাধারণ জনগনের সাথে খারাপ আচারন,মেম্বারদের পরিবার জড়িয়ে গালিগালাজ, বিভিন্ন সময় পরিষদে মারধর করার অভিযোগ তুলেছে আট মেম্বারের একাংশ।
চেয়ারম্যান সহ চার মেম্বর ও প্রতিপক্ষগ্রুপে আট মেম্বরদের মাঝে ভাগের বন্টন নিয়ে দীর্ঘদীন ধরে দুই গ্রুপে চলছে টানটান উত্তেজনা ও মতোবিরোধ। এর মাঝে চেয়ারম্যান বোর্ড অফিসের কার্যক্রম রূপাপাত বাজারে তার নিজ ব্যক্তিগত অফিসে নেওয়ার পায়তারা চালাচ্ছে।
প্রতিপক্ষ মেম্বারগণ প্রতিবাদ করায় দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সরজমিনে জানা যায়,গত সোমবার ১৯ সেপ্টেম্বর বোর্ড অফিসে রেশন কার্ড অনলাইন করবে বলে মেম্বারদের নিজ নিজ ওয়ার্ড থেকে কার্ড প্রাপ্তিদের আসতে বলে চেয়ারম্যান।
মেম্বর সহ সুবিধাভোগীরা সকাল ৯ টার মধ্যে আসলে দুপুর পর্যন্ত চেয়ারম্যান ও উদ্দ্যোক্তা না আসায় সকলে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিবাদ শুরু করে। স্থানীয় সাংবাদিকরা খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে গেলে মেম্বার ও জনগণ তার বিরুদ্ধে দূর্ণীতি, অনিয়ম, ক্ষমতার দাপট, অন্যায় ও অত্যাচারের ফিরিস্তি তুলে ধরেন। আন্দোলনের রূপ নেওয়ার আগে স্থানীয়রা এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক গ্রাম পুলিশ বলে দীর্ঘদিন ধরে চলছে দুই গ্রুপের ভাগাভাগি নিয়ে রেষারেষি। রাতে উদ্দ্যোক্তা রাব্বি ও গুপি রাত ৮টার সময় ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে তাদের অফিস থেকে কম্পিউটার সহ সকল প্রকার মালামাল আমাকে না জানিয়ে বের করে নেওয়ার প্রস্তুতি নেয়।
এর মধ্যে প্রতিপক্ষ গ্রুপের কয়েক মেম্বার, জনগণ ও সাংবাদিক এসে তাদের বাঁধা দেয়। মেম্বারদের দাবি ওই মালামাল চেয়ারম্যানের নির্দেশে বের করে নিচ্ছে।
পরে ইউএনও এবং উপজেলা চেয়ারম্যান থানা পুলিশ ফাঁড়িকে মেম্বারেরা অবগত করে।চেয়ারম্যানের প্রতিপক্ষ গ্রুপের মেম্বার শামিমা আক্তার (১, ২, ৩) নং আইয়ুব আলী মঙ্গল ১ নং, মুঞ্জুরুল ইসলাম ২নং, খুরশিদুল বাড়ি ৪ নং, রফিকুল ইসলাম রানিজ ৫ নং, আওয়াল মোল্যা ৬ নং, ইলিয়াস মোল্যা ৮ নং, সানোয়ার মোল্যা ৯নং ওয়ার্ড মেম্বার বলেন পূর্বের রেশন কার্ড বাতিল করে তার পক্ষের লোকদের রেশন কার্ড দিচ্ছে।
এর বিনিময়ে গোপনভাবে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে টাকা নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাই। জন্ম নিবন্ধনে ইচ্ছা মতে ৩০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা, চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট ৫০ টাকা, ওয়ারিশ সার্টিফিকেট নিতে আসলে তার পক্ষের লোকজন না হলে ভোগান্তিতে ফেলে। যারা ভোট দেয় নাই তারা কোন কাজে আসলে কালক্ষেপন করে ঘুরাতে থাকে। সরকারের কোন বরাদ্দ,উন্নয়ন মূলক প্রজেক্ট সকল প্রকার কাজে মিটিং না করে। তার ইচ্ছা মতে কাজ করে নিজেই বিল তোলে।
কোন সমন্বয় মিটিং এর তোয়াক্কা করে না সে। সব প্রকার সুবিধা ভোগী ভাতা কার্ড তার ইচ্ছা মতে (কিছু দালালের মতে) করে থাকে। একাধিক ভোক্তাভুগিরা বলেল, চেয়ারম্যান সময়মতো অফিস করে না। কোন কাজে আসলে ১ থেকে ৬ মাস লেগে যায়।
বিভিন্ন সময় জনগনের সাথে খারাপ আচরণ, গালিগালাজ ও মারধর করেছে। বিভিন্ন সময় ওই সব ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক ভাবে তোপের মুখে পরতে দেখা গেছে। উদ্দ্যোক্তার মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধনে সর্ব নিম্নে ইংরেজীতে ১৫০ টাকা এবং বাংলায় ১৫০ টাকা সর্বোচ্চ ঠিক নাই ১৫০০ টাকা নিয়েছে। সরকার নির্ধারিত রেটের চেয়ে অনেক বেশি নেয়।
তারপরেও মানুষকে দিনের পর দিন ঘোরাতে থাকে। তার ভুল করলে সম পরিমান টাকা গুনতে হয়। এদিকে সাদিয়া বলেন, আমার ছেলের স্বপ্ন’র জন্য জন্ম নিবন্ধন করতে গেল আমার কাছ থেকে ৫০০ টাকা নেয়। ৬ মাস হয়ে গেছে কিন্তু এখনো আমাকে দেয় নাই।
এদিকে ইউনিয়ন সচিব বলেন, আমি বদলি হয়ে গেছি এখন আমি এ বিষয় কথা বলব না। তবে মেম্বর, চেয়ারম্যানদের সাথে বিভিন্ন বিষয় বিরোধ চলে আসছে। অফিস বন্ধ থাকার কথা বললে অফিসে আসা এটা চেয়ারম্যানের বিষয়।
এ বিষয় ইউনিয়ন চেয়াম্যান মিজানুর রহমান মোল্যা বলেন, তাদের অভিযোগ সত্য নয়। তাদেরকে কোন কাজ দিলে লুটে-পুটে খায়। সঠিক ভাবে জনগন পায়না অভিযোগ পাই। পরে তাদের কাজের সাথে তদারকি করি বলে তারা আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওই সকল মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে।কম্পিউটার গোপনে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশের অভিযোগ এর বিষয় কথা বললে বলেন,তাদের ব্যক্তিগত কম্পিউটার তারা নিতে পারে। সরকারি কোন কম্পিউটার বা মালামা নিতে যায় নাই।
উপজেলা চেয়াম্যান এম এম মোশারেফ হোসেন মুশা মিয়া বলেন,এটা চেয়ারম্যান মেম্বারদের বিষয় না জেনে শুনে আমার কোন মতামত নেই। এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোশারেফ হোসাইন বলেন,আমি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এ জাতীয় কোন অভিযোগ পাইনি।
আলফাডাঙ্গা প্রতিনিধি
দৈনিক ভোরের বার্তা
About Author
Leave a reply
You must be logged in to post a comment.