মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তিতে অতিরিক্ত ফি-অভিযোগের তীর প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে


নড়াইলের কালিয়া উপজেলার খামার পারোখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর ভর্তিতে অতিরিক্ত ফি আদায়ে বিপাকে পড়েছে সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।
এতে অতিরিক্ত অর্থের অভাবে শিক্ষাজীবন থেকে ঝরে পড়ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। আর অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের তীর খোদ ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মল্লিক আলী আকবরের বিরুদ্ধে। এছাড়াও ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্ণীতির অভিযোগ তুলেছেন ওই স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নতুন শ্রেণীতে ভর্তিতে বেশী টাকা নিয়ে শিক্ষার্থী বা অভিভাবককে টাকা আদায়ের রশিদ না দেওয়া, বার্ষিক পরীক্ষার নাম করে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, এসাইনমেন্টে এক ৪শত টাকা নেওয়াসহ ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন না দিয়ে ও অভিভাবকদের সাথে মতবিনিময় না করে নিজের পছন্দমত অনিয়মতান্ত্রিকভাবে পকেট কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া।
অনিয়ম ও অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ব্যাপারে ৯ জানুয়ারি (রবিবার) সরেজমিনে গেলে অভিযোগের সত্যতা মেলে। শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা সাংবাদিদের জানান, বিদ্যালয়ে রশিদ বই থাকলেও রশিদ চাইলে দেওয়ার নিয়ম নাই বলে তাড়িয়ে দেন। বার্ষিক পরীক্ষায় ২হাজার২শত টাকা করে নিয়েছেন বিভিন্ন ভাবে বকেয়া দেখিয়ে।
তথ্য নিয়ে জানা যায়, নতুন শ্রেণীতে ভর্তিতে সেশন চার্জ ৫০০ টাকা ও রশিদ বইয়ের ২০ টাকাসহ মোট ৫২০ টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও তিনি ষষ্ঠ-অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত ৭শত ৮০ টাকা ও ৯ম শ্রেনীতে ৮শত টাকা ভর্তি বাবদ নিচ্ছেন ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
খামার গ্রামের জাহিদ মুন্সীর মেয়ে শান্তা জানায়, তারা দুই ভাই বোন ওই স্কুলে ৯ম শ্রেনীতে ভর্তি হতে গেলে ২৯৪০ টাকা করে লাগবে বলে জানান ওই প্রধান শিক্ষক। পরবর্তীতে তাদের মা এসে টাকা বাকি রেখে ১৪০০ টাকা দিয়ে ভর্তি করে যায়। কিন্তু তাদের কোন রশিদ দেওয়া হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক এ সকল অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিহীত ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানিয়েছেন।
এ সকল অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মল্লিক আলী আকবারের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, রশিদ এখনো আসে নাই তাই রশিদ দেওয়া হচ্ছেনা।
বার্ষিক পরীক্ষায় ২২শত টাকা নেওয়ার কথা ও নতুন শ্রেণীতে ভর্তিতে বেশী টাকা নেওয়ার ব্যপারে জানতে চাইলে তিনি গোজামিলে বোঝানোর চেষ্টা করেন। এছাড়া অন্যান্য অভিযোগের সত্যতা অস্বীকার করে কাজ আছে বলে তিনি সাংবাদিকদের এড়িয়ে যান।
এ বিষয়ে ঐ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি ও ইলিয়াছাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মল্লিক মনিরুল ইসলাম বলেন, নির্বাচিত হওয়ার পরে আমি ওই স্কুলে গিয়েছিলাম। আমি শুনেছি যে, অভিভাবকদের টাকা আদায়ের রশিদ না দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে এবং নিয়ম বহির্ভূতভাবে ম্যানেজিং কমিটি গঠনের চেষ্টা চলছে।
শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। আর সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন দুর্ণীতি মোটেই কাম্য নয়। আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শাহ্জাহান মিয়া বলেন, খামার পারো খালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মল্লিক আলী আকবরের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের লিখিত কোন কপি পাইনি। অভিযোগ পেলে প্রমান সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নড়াইল প্রতিনিধিঃ
দৈনিক ভোরের বার্তা
About Author
Leave a reply
You must be logged in to post a comment.