কালিয়া পৌর নির্বাচন: লড়াই হবে সমানে সমান

স্থানীয় নির্বাচনী বিশ্লেষকদের মতে, তিন প্রার্থীরই রয়েছে আলাদা ভোট ব্যাংক। যে কারণে লড়াই হবে সমানে সমান।
নড়াইলের সদর ও কালিয়া পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে চলতি মাসের ৩০ তারিখ। এর মধ্য কালিয়া পৌরসভায় আওয়ামী লীগের দুইজন বিদ্রোহী প্রার্থী থাকলেও শেষ পর্যন্ত একজন প্রার্থীতা প্রত্যাহার করায় চিত্র এখন ভিন্ন।
এখানে বিএনপি ও আ লীগের মনোনীত একক প্রার্থী দিতে সক্ষম হয়েছে। যে কারণে নিজেদের কর্মী-সমর্থকদের ভোট নিজেদের ব্যালট বাক্সেই বন্দি হবে।
বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকলেও স্বতন্ত্র হিসেবে ভোটের মাঠে লড়বেন একজন হেভিওয়েট প্রার্থী। আওয়ামী লীগ বা বিএনপি, দুই প্রার্থীর সঙ্গে সমান তালে লড়ে যাবেন তিনিও।
গত সোমবার নিজেদের প্রতিক নিয়ে ভোটের আনুষ্ঠানিক প্রচারনা শুরু করেছেন তিন মেয়র প্রার্থী। বিএনপি মনোনীত প্রার্থী স ম ওয়াহিদুজ্জামান, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী উপজেলা আ লীগে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃওয়াহিদুজ্জামান (হীরা) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান মেয়র ফকির মুশফিকুর রহমান লিটন।
স্থানীয় নির্বাচনী বিশ্লেষকদের মতে, তিন প্রার্থীরই রয়েছে আলাদা ভোট ব্যাংক। যে কারণে লড়াই হবে সমানে সমান। তাদের দাবি, আওয়ামী লীগ-বিএনপির প্রার্থীদের ক্ষেত্রে দলীয় ভোট যেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে তেমনি স্বতন্ত্র প্রার্থীরও নিজস্ব একটি ভোট ব্যাংক রয়েছে। বর্তমান মেয়র হওয়ার কারণে ফকির মুশফিকুর রহমান লিটন কে এগিয়ে দিতে পারে সুবিধা ভোগীদের ভোট। যে কারণে কালিয়া পৌরসভার সমীকরণ খুবই কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে বলে মত তাদের।
কেউ কেউ বলছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের গ্রুপিংয়ের প্রভাব ফেলতে পারে পৌরনির্বাচনে। যে কারণে হাতছাড়া হতে পারে আওয়ামী লীগের দলীয় ভোট।
অন্য দিকে বিদ্রোহী ও আওয়ামী লীগের মুখোমুখি অবস্থান এর কারণে কিছুটা সুবিধা নিতে পারে বিএনপি। তবে দলের নড়বড়ে অবস্হানের কারণে অসন্তুষ্ট বিএনপির কয়েকজন নেতৃবৃন্দ। যে কারণে তারাও দলীয় ভোটের একটি বিরাট অংশ নিজের বাক্সে আনতে পারবেন না।
সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির এই নড়বড়ে অবস্হানের কারণকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে মরিয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী লিটন। এছাড়া নতুন ভোটারদের ভোটগুলো নিজে ক্যাপচার করতে চান। এর জন্য বেশ কৌশলও অবলম্বন করছেন তিনি। তবে দলগত বিভক্তি নেই সাধারণ ভোটারদের মধ্যে। তারা বলছেন যে ব্যক্তি পৌরসভার উন্নয়নে কাজ করবেন তাকেই তারা ভোট দেবেন।
এ ব্যাপারে স্বতন্ত্র প্রার্থী মুশফিকুর রহমান লিটন বলেন, আমি বিগত পাঁচ বছরে পৌরসভায় যে উন্নয়ন করেছি পূর্বে তা হয়নি। যে কারণে আমার কাজ দেখেই জনগণ আমাকে মূল্যায়ন করবে।
এছাড়াও লোকাল নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী তেমন প্রভাব ফেলতে পারে না। এখানে জনগন প্রার্থী দেখেই ভোট দেয়। সেক্ষেত্রে আমি যেহেতু স্বতন্ত্র প্রার্থী আমাকেই ভোট দেবে জনগণ। জনগণ আমাকে গতবার বিপুল ভোটে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত করেছিল।এবারও আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদি।’
আওয়ামী লীগ প্রার্থী ওয়াহিদুজ্জামান হীরা বলেন, ‘দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। যে কারণে দলীয় নেতৃবৃন্দ সবাই আমার পক্ষে কাজ করছেন। এরই মধ্যে নৌকার পক্ষে মানুষের গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং এটা বলা যায়, নৌকার জয় কেউ প্রতিহত করতে পারবেন না।’
বিএনপির দলীয় প্রার্থী স ম ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, জনগন যদি সুষ্ঠু ভাবে এবার পৌর নির্বাচনে যোগ্য প্রার্থীকে তাদের মুল্যবান ভোট দিতে পারে তাহলে আমি রেকর্ড সংখ্যক ভোটে জয়লাভ করব।
উল্লেখ্য, কালিয়া পৌরসভার ভোটার সংখ্যা ১৬৩৫৩ জন।
মোঃ বাবর আলী, নড়াইল